অন্যরকম স্বপ্ন ও ভালবাসা
আশরাফ উদ্দীন আহমদ

বাসটা অকস্মাৎ বিশ্রী একটা শব্দ করে দাঁড়ালো পৌরসভার প্রধান গেইটের মুখে। কয়েকজন যাত্রীর সাথে বাস থেকে নেমে ডাকঘর মোড়ের দক্ষিণ  দিকের রাস্তা ধরে সোজা যেতে থাকে পরীবানু। অর্জুন গাছের মাথায় দুপুরের রোদ খেলা করছে, কয়েকটা কাক  কা-কা করে ডেকে যাচ্ছে। পৌরসভার গেইটের মাথায় দুটো শালিক বসে আছে। পরীবানু এখন হাঁটছে, কাঁধে তার একটা পুটলি জাতীয় কিছু, এলোমেলো শাড়ির আঁচল বাতাসে খেলা করছে।

শামীম আজাদ আনোয়ার

কবি কাজী নজরুল ইসলামের উল্লেখযোগ্য গল্প গ্রন্থের মধ্যে শিউলীমালা অন্যতম। এ গ্রন্থের অগ্নিগিরি গল্পটি সরাসরি ত্রিশালের পটভূমির উপর রচিত। এ গল্পের স্থান, কাল, পাত্রপাত্রী, ভাষাসহ সবই ত্রিশাল কেন্দ্রিক। এ গল্পে ত্রিশাল, বীররামপুর গ্রাম, ত্রিশাল মাদ্রাসা, নুরজাহান, রুস্তম, ময়মনসিংহ হাসপাতাল, ত্রিশাল থানাসহ ত্রিশালের আঞ্চলিক ভাষার উল্লেখ রয়েছে প্রায় পুরো গল্প জুড়েই।


কপোতাক্ষ নদ

মাইকেল মধুসূদন দত্ত 

সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে
সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে।
সতত যেমনি লোক নিশার স্বপনে
শোনে মায়া যন্ত্র ধ্বনি তব কলকলে
জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে।


তাহারেই পড়ে মনে
বেগম সুফিয়া কামাল

“হে কবি! নীরব কেন-ফাল্গুন যে এসেছে ধরায়,
বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়?”
কহিল সে স্নিগ্ধ আঁখি তুলি-
“দখিন দুয়ার গেছে খুলি?

আমাদের গ্রাম
বন্দে আলী মিয়া
আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর,
থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর৷
পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই,
এক সাথে খেলি আর পাঠশালে যাই৷

পাঞ্জেরি

ফররুখ আহমেদ

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?
সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে?
তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।
রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?


কবর 

জসীম উদ্ দীন

এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।






হিমু
হুমায়ুন আহমেদ

উৎসর্গ
আয়েশা মোমেন,

আপা, আপনি ভালবাসার যে কঠিন ঋণে আমাকে

জড়িয়ে রেখেছেন, সেই ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়।।
ঋণ হয়ে থাকতে ভাল লাগে না, কিন্তু কী আর করা!


প্রসঙ্গ হিমু

হিমু আমার প্রিয় চরিত্রের একটি। যখন হিমুকে নিয়ে কিছু লিখি—নিজেকে হিমু মনে হয়, একধরণের ঘোর অনুভব করি। এই ব্যাপারটা অন্য কোনো লেখার সময় তেমন ঘটে না। হিমুকে নিয়ে আমার প্রথম লেখা ময়ুরাক্ষি। ময়ুরাক্ষি লেখার সময় ব্যাপারটা প্রথম লক্ষ করি। দ্বিতীয়বারে লিখলাম দরজার ওপাশে। তখনো একই ব্যাপার। কেন এরকম হয়? মানুষ ‍হিসেবে আমি যুক্তিবাদী। হিমুর যুক্তিহীন, রহস্যময় জগৎ একজন যুক্তিবাদীকে কেন আকর্ষণ করবে? আমার জানা নেই। যদি কখনো জানতে পারি—পাঠকদের জানাবো।


চল চল চল
কাজী নজরুল ইসলাম

চল চল চল!
ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল
নিম্নে উতলা ধরণি তল,
অরুণ প্রাতের তরুণ দল
চল রে চল রে চল
চল চল চল।।

ঊষার দুয়ারে হানি' আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত,
আমরা টুটাব তিমির রাত,
বাধার বিন্ধ্যাচল।

নব নবীনের গাহিয়া গান
সজীব করিব মহাশ্মশান,
আমরা দানিব নতুন প্রাণ
বাহুতে নবীন বল!
চল রে নও-জোয়ান,
শোন রে পাতিয়া কান
মৃত্যু-তরণ-দুয়ারে দুয়ারে
জীবনের আহবান।
ভাঙ রে ভাঙ আগল,
চল রে চল রে চল
চল চল চল।।


কোরাসঃ
ঊর্ধ্ব আদেশ হানিছে বাজ,
শহীদী-ঈদের সেনারা সাজ,
দিকে দিকে চলে কুচ-কাওয়াজ—
খোল রে নিদ-মহল!

কবে সে খেয়ালী বাদশাহী,
সেই সে অতীতে আজো চাহি'
যাস মুসাফির গান গাহি'
ফেলিস অশ্রুজল।

যাক রে তখত-তাউস
জাগ রে জাগ বেহুঁশ।
ডুবিল রে দেখ কত পারস্য
কত রোম গ্রীক রুশ,
জাগিল তা'রা সকল,
জেগে ওঠ হীনবল!
আমরা গড়িব নতুন করিয়া
ধুলায় তাজমহল!
চল্‌ চল্‌ চল্।।


চল্‌ চল্‌ চল্‌ বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কর্তৃক ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে রচিত এবং সুরারোপিত সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত একটি গান। দাদরা তালের এই সঙ্গীতটি ১৯৭২ সালের ১৩ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের তৎকালীন মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের রণ-সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচন করা হয়। বাংলাদেশের যে কোনো সামরিক অনুষ্ঠানে এই গানটির ২১ লাইন যন্ত্রসঙ্গীতে বাজানো হয়।



আমার সোনার বাংলা 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমার সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালবাসি।

চিরদিন তোমার আকাশ,
তোমার বাতাস
আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।

ও মা,
ফাগুনে তোর আমের বনে
ঘ্রাণে পাগল করে
মরি হায়, হায় রে
ও মা,
অঘ্রানে তোর ভরা খেতে,
আমি কী দেখেছি মধুর হাসি।।

কী শোভা, কী ছায়া গো,
কী স্নেহ, কী মায়া গো,
কী আঁচল বিছায়েছ
বটের মূলে,
নদীর কূলে কূলে।

মা, তোর মুখের বাণী
আমার কানে লাগে
সুধার মতো-

মা তোর বদন খানি মলিন হলে
আমি নয়ন
ও মা আমি নয়ন জলে ভাসি
সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালবাসি।


গানটি ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। এ গানের রচয়িতা ও সুরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই গানটি রচিত হয়েছিল। ১২ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে এ গানটির প্রথম দশ লাইন সদ্যগঠিতগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয়সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত হয়।আনুষ্ঠানিকভাবে কেবল প্রথম চার লাইন বাদন করা হয়।
ছড়ানু-২
ওয়াহিদ জামান

কয়জনকে থামাবে তুমি
আর কত জন মারবে,
ফাঁসি দিয়ে আদর্শকে
থামাতে কি পারবে?

সুমাইয়ারা যুগে যুগে
জীবন দিতে পারবে,
আবু জেহেল লাহাবেরা
অবশেষে হারবে।
ছড়ানু-১
ওয়াহিদ জামান

মাঝে মাঝে মাঝরাতে
আকাশের আঙিনাতে
খুঁজেছি তোমায়,

পাইনি চাঁদের দেশে
পাইনি তারার বেশে
ভুলেছো আমায়।

তুমি
ভুলেছো আমায়?
জিরো ফিগার গরু
ওয়াহিদ জামান


গরু এবার
জিরো ফিগার
ঈদুর আযহার আগে,

মুটকি গরু
হইছে সরু
দেখতে সেইরম লাগে।

গত বারের
মোটা ষাড়ের
দাম ওঠেনি তাই,

কম খেয়েছে
জিম করেছে
চর্বি এখন নাই।

স্লিম ফিগার
ফিল্ম ফিগার
গরুর কত বাহার,

সে কি জানে
জীবন দানে
হবে কাদের আহার।
গাছ বন্ধু
ওয়াহিদ জামান


জনে জনে লাগাও গাছ
বিলাও আরো দু’টি,
সুন্দর হবে পরিবেশ
জুটবে রুজি-রুটি।

ফলজ, বনজ, ঔষধি গাছ
রোপণ করো সবে,
সবুজ হবে চারিপাশ
কীর্তি তোমার রবে।

অকারণে আর কেটোনা
গাছ-গাছালী যতো,
সকাল সন্ধ্যা জপছে তারা
তাসবীহ অবিরত।

একটা কেটে দুইটা লাগাও
দরকার যদি পড়ে,
গাছই তোমার বন্ধু হবে
বিপদ-আপদ, ঝড়ে।

 সেই ঈদ এই ঈদ : সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতি

ওয়াহিদ জামান

‘প্রত্যেক জাতিরই আনন্দ উৎসব আছে, আর আমাদের আনন্দ উৎসব হলো দুই ঈদ।’ বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ স.-এর এমন ঘোষণার মাধ্যমেই দ্বিতীয় হিজরীতে ঈদ উৎসবের গোড়াপত্তন হয়। সেই ঈদ এখন বিশ্বের সবচেয়ে শুদ্ধতম আনন্দ উৎসবে পরিণত হয়েছে। ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। প্রতি বছর দুই বার এই আনন্দের জোয়ারে ভাসতে থাকে গোটা মুসলিম বিশ্ব। ঈদুল ফিতর পালন করা হয় শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখে। পবিত্র রমযান মাসের পরিসমাপ্তির পর পশ্চিম আকাশে যখন ঈদের বাঁকা চাঁদ ভেসে ওঠে তখন ছোট-বড় নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মুসলিমদের হৃদয়ে ঈদের আনন্দ দোলা দেয়। এ যেন নতুন কিছু প্রাপ্তির মহা আনন্দ। প্রকৃতপক্ষে রমযানের কঠোর সাধনা, ইবাদত-বন্দেগী ও রোযার প্রতিদান স্বরূপ মহা পুরস্কার ঘোষণার দিন হচ্ছে এ আনন্দময় দিন। আর জিলহজ্ব মাসের দশ তারিখে পালিত হয় ঈদুল আযহা। মহান আল্লাহ তা’লা হযরত ইব্রাহিম আ.-কে অসংখ্যবার পরীক্ষা করেছিলেন। একবার তিনি তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাইল আ.-কে কুরবানী করার জন্য স্বপ্নযোগে আদিষ্ট হন। তিনি যখন ইসমাইলকে কুরবানী করছিলেন তখন ফেরেশতা মারফত তাকে সরিয়ে দুম্বা কুরবানী করানো হয়। সেই স্মৃতিকে ধারণ করে এ দিনে ঈদুল আযহা তথা কুরবানীর ঈদ পালন করা হয়।
ঈদস্মৃতি
ওয়াহিদ জামান


ঈদের ঢাকা, ফাঁকা ফাঁকা
একলা শুয়ে আছি,
কল্পনাতে জল্পনাতে
অতীত চলে গ্যাছি।

সকাল হতে ঈদগাহেতে
থাকতো অনেক কাজ,
ফুল টানানো, রং লাগানো
হরেক রকম সাজ।

পুকুর জুড়ে ভেলায় চড়ে
গোসল করতো সবে,
মুরুব্বিরা বলতো এসে
মাঠে যাবে কবে?

নামাজ শেষে বাবা যেতেন
দাদার কবর পাশে,
আমি যেতাম সাথে সাথে
কবর দেখার আশে।

দু’হাত তুলে খোদার কাছে
কাঁদেন যারে যার,
বাজানরে মোর ক্ষমা করো
মাফ চাই বারে বার।

তারপর হতো বাড়ী বাড়ী
দিনভর খাওয়া-দাওয়া,
বিকাল হলেই মায়ের সাথে
নানার বাড়ী যাওয়া।

এখন যে আর সেই আনন্দ
পাইনা খুঁজে আমি,
আমার অতীত দাও ফিরিয়ে
ওগো অন্তর্যামী।
কাণ্ডারি ফররুখ
ওয়াহিদ জামান


মাঝ দরিয়ায় ভাসছে তরী
ডুবছে মানুষজন,
মাঝি-মল্লা নেইকো সেথায়
কান্না প্রতিক্ষণ।

দিন পেরিয়ে রাত্রি আসে
পায়না তবু কূল,
আনাড়ি সব মাঝিগুলো
করছে শুধুই ভুল।

নীল দরিয়ার গর্জন শুনে
কাঁদছে শিশুর দল,
উদ্ধার করো - রক্ষা করো
আবেদন নিষ্ফল।

সাত সাগরে নাও ভাসাবে
কাণ্ডারি ফররুখ,
সেই আশাতে অপেক্ষাতে
আমরা যে উন্মুখ।
সব ভালো - ভালো নয়
ওয়াহিদ জামান


ভালোর পাশে মন্দ থাকে
সব ভালো - ভালো নয়,
চক্ষু কর্ণ খোলা রেখে
সাবধানে চলতে হয়।

বাড়ির পাশে রাস্তা থাকলে
চলতে ফিরতে ভালো,
চারিপাশে থাকলে তবে
ভরবে ঘরে ধূলো।

বিজ্ঞ জনের পরামর্শ
অনেক কাজে লাগে,
বেশি হলে বিরক্তিতে
কাজ ছেড়ে সব ভাগে।

পড়ানো এবং থাপড়ানো
পার্থক্য নয় বেশি,
একটা থ-এর জন্য রে ভাই
হয় যে রেষারেষি।

সৎ-সততা সবার চাওয়া
ভালোর আশায় হয়তো,
সৎ-ও ভালো মা-ও ভালো
সৎ-মা তবে নয়তো।
মায়ের ছায়া
ওয়াহিদ জামান


তোমার মায়ায় তোমার ছায়ায় - থাকতে যে মন চায়,
মাগো তুমি কোথায় আছো - কোন সে নিরালায়।।

ফজর হলে আমার মাগো - ডাকতো মায়ার সুরে,
নামাজ পড়তে যারে বাবা - মসজিদ নয়তো দূরে।।
নামাজ শেষে মক্তবে যাস (২) থাকবে খোদা সহায় - ঐ

রাস্তা পানে চেয়ে থাকতো - ছুটির বেলা হলে,
স্কুল থেকে ফিরলে মাগো - চুমা দিতো গলে।।
রাগলে আমি আদর করে (২) হাত বুলাতো মাথায় - ঐ

হৃদয় মাঝে সকাল সাঝে - খুঁজি আমি যাকে,
তোরা কোথায় আয়রে হেথায় - খুঁজে দে মোর মাকে।।
মা জননী ডাকবে কখন (২) আয়রে খোকা আয় - ঐ


গোল্ডেন রেজাল্ট
ওয়াহিদ জামান


তোমরা যারা পাশ করেছ
গোল্ডেন রেজাল্ট নিয়ে,
মাথাটাকে নতো করো
লম্বা সেজদা দিয়ে।

মেধা তোমায় দান করেছেন
মহান আল্লাহ তা’লা,
প্রথম ওহী দিলেন তিনি
জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালা।

এই পাওয়াটাই শেষ পাওয়া নয়
সামনে আরো আছে,
তাওফীক চেয়ে দোয়া করো
আল্লাহ তা’লার কাছে।

বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়
অনেক লড়তে হবে,
সবখানেতেই সফল হলে
কীর্তি তোমার রবে।
চরম গরম
ওয়াহিদ জামান


পড়ছে গরম
লাগছে চরম
পুড়ছে দেহের চামড়া,

হালকা কামে
ভিজছি ঘামে
যেন সিদ্ধ আমড়া।

জৈষ্ঠ্যের দুপুর
হাঁপায় কুকুর
দম যেন যায় উড়ে,

গাছের ছায়ায়
শীতল মায়ায়
হৃদয় যায়গো জুড়ে।

লজ্জা শরম
হচ্ছে নরম
পুরুষ উদোম গায়ে,

তালের পাখা
হাতে রাখা
নারী নগ্ন পায়ে।

পুকুর পেলে
দুষ্ট ছেলে
দিচ্ছে তাতে ঝাপ,

লেবুর পানি
দিচ্ছে নানী
তরমুজ আনে বাপ।

আম কাঁঠালে
লিচুর ডালে
গ্রীষ্ম দেয় যে সাড়া,

জামরুল তালে
জাম ও বেলে
জাগায় ফলের পাড়া।

হেকমত মানে
ওয়াহিদ জামান

হেকমত মানে নয়তো রে ভাই
মিথ্যা পথে চলা,
হেকমত হলো সত্যটাকে
হালকা ঘুরিয়ে বলা।

হেকমত মানে নয়তো রে ভাই
ঘরের কোণে নামাজ,
মসজিদে যাও নইলে হবেন
আল্লাহ রাসুল নারাজ।

হেকমত মানে নয়তো রে ভাই
বন্ধ করা কাজ,
নতুন ভাবে করতে হবে
নেইতো সেথায় লাজ।

হেকমত মানে নয়তো রে ভাই
অমিল কথায় কাজে,
হেকমত হলো সৎ-সততা
থাকবে ভাঁজে ভাঁজে।

হেকমত নয়তো মৃত্যু ভয়ে
ইসলাম ছেড়ে দেয়া,
হেকমত হলো লড়ে লড়ে
চলবে জীবন খেয়া।
নারী নেত্রীর দেশ
ওয়াহিদ জামান


আমার মায়ের স্বাধীনতা
আসবে কবে বলো,
রান্নাঘরের চুলোর ধারেই
জীবন কেটে গেল।

যাননি কভু মেম্বার হতে
চাননি বাসের সিট,
মিছিল মিটিং করতে হলে
লজ্জায় হবেন ফিট।

আমার বোনের স্কুল পথে
হাজার বাঁধা থাকে,
বখাটেরা ডিস্টার্ব করে
রাস্তার বাঁকে বাঁকে।

যৌতুক ছাড়া হয়না বিয়ে
আমার গরীব বোনের,
হিসাব নাইতো ধর্ষিত আর
নির্যাতিত জনের।

জন্ম থেকেই দেখছি আমি
নারী নেত্রীর দেশ,
তবু কেন নেইকো নারীর
অধিকারের লেশ।
রঙিন পথে
ওয়াহিদ জামান


সবার কাছে
স্বপ্ন আছে
আমার শুধু নেই,

ছিলাম যেমন
থাকবো তেমন
আছি ভালো সেই।

বলেন গুরু
করো শুরু
জীবন আগে গড়ো,

চড়বে গাড়ি
গড়বে বাড়ি
হবে অনেক বড়।

জীবন নাকি
দিবে ফাঁকি
লাভ কি বলো তবে,

মরবে তুমি
ধরবে ভূমি
বিদায় নিতে হবে।

তাইতো বলি
ধীরে চলি
সস্তা রঙিন পথে,

ডাকবে যখন
চড়বো তখন
আখিরাতের রথে।
রোহিঙ্গা নয় মানুষ
ওয়াহিদ জামান


ক্ষুুধার্ত ঐ মানুষগুলো
ভাসছে সাগর বুকে,
এমন করে অসহায়রা
মরবে ধুকে ধুকে?

মানবতার ব্যবসায়ীরা
গেল কোথায় এখন,
সর্দি-জ্বরে বিবৃতি দেয়
যারা যখন তখন।

সবাই তাদের তাড়িয়ে দেয়
নির্দয় কঠিন ভাবে,
তীরে ভীড়লে ওরা নাকি
লুটে পুটে খাবে।

রোহিঙ্গা নয় মানুষ ওরা
ভাবছে নাতো কেহ,
মুসলিমরাও গেছে ভুলে
একটাই তাদের দেহ।

আল্লাহ খোদা চেয়ে দেখো
তাদের চোখের পানি,
আকাশ থেকে অনেক বড়
তোমার দয়া জানি।

পাঠিয়ে দাও শাসক ওমর
ভাবতে সবার কথা,
কুকুর মরলেও যার মনে
লাগবে বড়ই ব্যথা।
কাবার ঘরে
ওয়াহিদ জামান


পাগলা হাওয়া, পাগলা হাওয়া - আমায় নিয়ে যারে,
মন পাখিটা যেতে চায় যে - ঐসে কাবার ঘরে।।

যেথায় আছে হাজরে আসওয়াদ - কালো পাথর ওরে,
সেথায় নিয়ে যারে তোরা - গুনাহ মাফের তরে।।
হাজির হাজির বলবো আমি-(২) কাবা ঘুরে ঘুরে।
মন পাখিটা যেতে চায় যে.....ঐ

সাফা মারওয়া সায়ী করবো - মাথার কাপড় ফেলে,
যেমন হাজরা করেছিল - দূরে রেখে ছেলে।।
মিনায় যাবো পাথর মারবো-(২) ইবলিশ শয়তান টারে।
মন পাখিটা যেতে চায় যে.....ঐ

বিদায় হজের সেই সে ভাষণ - আর পাবো না কভু,
তবু যাবো আরাফাতে - বলতে হাজির প্রভু।।
মদীনাতে সালাম দিবো-(২) রাসুল পাকের দ্বারে।
মন পাখিটা যেতে চায় যে.....ঐ

ধুমকেতুর তালে
ওয়াহিদ জামান


সত্য ন্যায়ের বিজয় কেতন
আপন হস্তে ধরে,
দুখু মিয়া জন্ম নিলেন
জগৎ আলো করে।

মক্তব থেকে মুয়াজ্জিনী
লেটোর দলের গায়ক,
আসানসোলের রুটির দোকান
তারপর হলেন নায়ক।

সবাই যখন লিখতেন শুধু
ঘুম পাড়ানীর গান,
নজরুল তখন ক্ষেপে গিয়ে
লিখলেন ভাঙ্গার গান।

পদচি‎হ্ন‎ এঁকে দিতেন
অত্যাচারীর গালে,
বিদ্রোহীরা উঠতো জেগে
ধুমকেতুর তালে।

অগ্নি-বীণা, বিষের বাঁশী
নির্ঝরের এই স্রষ্টা,
গানের পাখি যৌবন বাতি
বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা।

তিনি মোদের জাতীয় কবি
সংবিধানে নেই,
আয়রে নবীন সবাই মিলে
আগুন জ্বেলে দেই।

মা
ওয়াহিদ জামান


মাকে ভালোবাসতে আমার
দিবস লাগেনা,
মা তো আমার দুঃখ সুখের
নিত্য ঠিকানা।


মায়ের কাছেই বড় হওয়া
মায়ের হাতে খাওয়া,
মায়ের কাছেই অফুরন্ত
ভালোবাসা পাওয়া।


ছোট্ট বেলায় মায়ের কাছেই
কাটতো সারা রাত,
খাওয়া শেষেই আঁচল দিয়ে
মুছতাম ভেঁজা হাত।


আমার কষ্টে মায়ের চোখে
আসতো চলে পানি,
সুখের বেলায় মায়ের হাসি
জুড়াতো বুক খানি।


মায়ের আদর বাবার শাসন
ভুলে যাবার নয়,
তাদের ভালোবেসে আমি
জান্নাত করবো জয়।
চেয়ারের মান
ওয়াহিদ জামান


ব্যক্তি ভিসি
হারাক বিচি
দুঃখ নেইকো তাতে,

চেয়ারের মান
হলে খান খান
আঘাত লাগে জাতে।

শিক্ষা গুরু
দুরু দুরু
ভয়ে কাঁপে দেহ,

ছাত্র সমাজ
বিরুদ্ধে আজ
সঙ্গে নেইতো কেহ।

শিক্ষকেরা
দিশেহারা
বিবৃতি দেয় নিন্দার,

ক্ষমতা ঢের
পেলামতো টের
অভিনয়টা জিন্দার।

ছাত্র পেলে
চাঁপে ফেলে
দাপট দেখায় যারা,

সন্ত্রাসীদের
নগ্ন জিদের
সেলাম জানায় তারা ! ?

আহা ! লিঙ্গ হারা
লিঙ্গ হারা তারা।
বোশেখ সংস্কৃতি
ওয়াহিদ জামান


বোশেখ মানে বছর শুরু
নববর্ষ পালন,
বোশেখ মানে রবি নজরুল
বাউল সাধক লালন।

বোশেখ মানে পান্তা ইলিশ
চিংড়ি মাছের ভর্তা,
বোশেখ মানে ধুতির সাথে
পানজাবী গায় কর্তা।

বোশেখ মানে স্বল্প বসন
পাতলা শাড়ীর বাহার,
বোশেখ মানে ট্যাটু আঁকা
নষ্ট মনের আহার।

বোশেখ মানে ঢোল তবলা
বাঁকা বাঁশের বাঁশি,
বোশেখ মানে প্রেমিক যুগল
বসবে পাশাপাশি।

বোশেখ মানে মেলার নামে
জুয়া খেলার আসর,
বোশেখ মানে নগ্ন হাওয়া
শয়তান চ্যালার বাসর।

এই কি তাবে আসল বোশেখ
বর্ষ বরণ রীতি,
এই কি ছিল আকবরের সেই
বাংলা সনের নীতি।

বোশেখ ছিলো বকেয়া শোধ
পাওনাদারের হাসি,
বোশেখ ছিলো ফসল তুলে
হালখাতাতে চাষী।

সেই বোশেখের সংস্কৃতি
চুরি করল যারা,
জাতীর সাথে মুনাফেকী
শত্রু মোদের তারা।

এখন সময় জাগতে হবে
রুখতে তাদের ছলা,
সংস্কৃতি  ফিরবে তবে
উঁচু করে গলা।
জ্বর সর্দি মাথাব্যথা
ওয়াহিদ জামান


জ্বর জ্বর সারা গায়
কিছু ভালো লাগে না,
নাক জুড়ে সর্দিটা
কিছুতেই ভাগে না।

আহা ভার মাথাটা
টিপ টিপ ব্যথাযে,
শুয়ে কাটে দিন-রাত
মুড়িয়ে কাঁথাযে।

পরীক্ষা পরীক্ষা
ক্লাসে ও শরীরে,
প্রস্তুতি জিরো জিরো
চিন্তায় মরি রে।

দোয়া, দোয়া, দোয়া চাই
কই মোর প্রিয়জন?
ক্ষমা চাই, মাফ করো
আল্লাগো প্রতিক্ষণ।
ধর্ষণরাজ্যে ধর্ষিত ক্রিকেট
ওয়াহিদ জামান


আজব একটা রাজ্য
যেন ধর্ষণের বাণিজ্য।

ধর্ষণ করে মাকে
ধর্ষণ করে মেয়েকে
ধর্ষিত হয় বুড়ি
ধর্ষিত হয় ছুড়ি।

ধর্ষিত হয় ছাত্রী
ধর্ষিত হয় যাত্রী
ধর্ষিত হয় পাত্রী
ধর্ষণ হয় রাত্রি।

ধর্ষণ করে মাঠে
ধর্ষণ করে ঘাটে
ধর্ষণ করে আস্থায়
ধর্ষণ করে রাস্তায়।

ধর্ষিত হয় পুলিশ
ধর্ষিত হয় ফুলিশ
ধর্ষকরা সাংঘাতিক
ধর্ষিত তাই সাংবাদিক।

ধর্ষক কতো বেশী
ধর্ষিত হয় বিদেশী
ধর্ষিত বিশ্ব বিবেক
ধর্ষিত জাতীর আবেগ।

ধর্ষিত ক্রিকেট বোর্ড
ধর্ষিত ক্রিকেট কোর্ট
ধর্ষিত পুরো বিশ্ব
সবাই এখন নিঃস্ব।

বসবাস ধর্ষণের স্বর্গে
নীতি-নৈতিকতা তাই মর্গে।
ভয় নেই বাংলাদেশ
ওয়াহিদ জামান


মন খারাপ বাংলাদেশ
মন খারাপ আমার,
আইসিসি আর ভারত
সব শালা চামার।

আইসিসি পাল্টালো
ইন্টারন্যাশনাল নাম,
এখন করে শুধুই
ইন্ডিয়ানদের কাম।

আম্পায়ার সব লায়ার
করলি কিসের লোভ?
একবারও ভাবলি না
বিশ্ববাসীর ক্ষোভ।

প্রকাশ্য ডাকাতি
ছি ছি ইন্ডিয়া,
ধর্ষিত ক্রিকেটের
কই সেই জাঙ্গিয়া?

দূর্নীতির আগুনে
ওরা হবে নিঃশেষ,
সততা আছে তাই
ভয় নেই বাংলাদেশ।
অবিরাম যুদ্ধ
ওয়াহিদ জামান


জেগে গেছে বাংলাদেশী
জাগছে ক্রিকেটার,
ভারত চক্রের রেহাই নেইকো
জাগলে পিকেটার।

দেশকে ধ্বংসের স্বপ্ন তাদের
সফল হবার নয়,
রক্ত দিয়েছি আরো দিবো
করি নাতো ভয়।

বৃটিশ পালায় ব্যাবসা ছেড়ে

ব্যর্থ জীবন নিয়ে,
পাকসেনারাও গেলো চলে
অস্ত্র জমা দিয়ে।

ভারতীয় দালাল চক্রের
আর হবেনা ছাড়,
যেথায় পাবে সেথায় তাদের
মটকে দিবে ঘাড়।

যতই দাপট দেখাও তোমরা
একদিন হবে ক্ষয়,
অবশেষে নিশ্চয় দেখবে
মানবতার জয়।
ক্রিকেট যুদ্ধ
ওয়াহিদ জামান


বৃটিশ ছিলো দাদার শত্রু
খতম হয়ে গেছে,
ইস্ট ইন্ডিয়ার ব্যাবসাপাতি
নেইতো তাদের কাছে।

উর্দুভাষী পাকিস্তানী
বাবার শত্রু ছিলো,
যুদ্ধ শেষে হেরে গিয়ে
কদমে ফুল দিলো।

এখন আসছে ভারতীরা
নতুন শত্রু বেশে,
সীমান্তে লাশ সকাল দুপুর
ফেলছে হেসে হেসে।

অস্ত্র পাঠায় মাদক পাঠায়
অবৈধ পথ দিয়ে,
অপরাধীরা আশ্রয় পায়
ঐ সে ভারত গিয়ে।

তাইতো তারা মোদের শত্রু
বীর সেনানী জাগো,
লড়াই হবে ছক্কা-চারে
উইকেট ছেড়ে ভাগো।
মিথ্যার সাথে বসবাস
ওয়াহিদ জামান


মিথ্যা বলি প্রতিদিন
মিথ্যা শুনি প্রতিক্ষণ
মিথ্যা লিখি প্রতিনিয়ত
মিথ্যা পড়ি প্রতিমূহুর্তে।

মিথ্যার ছড়াছড়ি মোবাইলে
মিথ্যার গড়াগড়ি ফেসবুকে
মিথ্যার জড়াজড়ি পত্রিকার পাতায় পাতায়
মিথ্যার হুড়োহুড়ি টিভি সংবাদের পরতে পরতে।

মিথ্যা বলেন ছাত্র
মিথ্যা বলেন শিক্ষক
মিথ্যা বলেন প্রজা
মিথ্যা বলেন রাজা।

প্রেমের নামে মিথ্যা
সেবার নামে মিথ্যা
যেন সত্য গেছে পরবাস
তাই মিথ্যার সাথে বসবাস।

আমায় বোবা বানাও প্রভু
যেন মিথ্যা বলতে না পারি
যেন মিথ্যা পড়তে না পারি।

আমায় পঙ্গু করে দাও মালিক
যেন মিথ্যা লিখতে না পারি
যেন মিথ্যার ডাকে স্তব্ধ থাকি।

আমাকে বধির করে দাও
যেন মিথ্যা না শুনতে হয়
মিথ্যা আর ভালো লাগেনা।


শুধু চোখ দুটি ভালো রেখো মাবুদ
চোখতো আর মিথ্যা দেখেনা
ক্ষমা করো, বাঁচাও, বাঁচাও, বাঁচাও।
জিতে গেছে বাংলাদেশ
ওয়াহিদ জামান


জিতে গেছে মোর বাংলাদেশ
জিতে গেছি আমি,

একই সাথে জিতলো রুবেল
উইকেট অনেক দামী।

জিতে গেছে আমার আবেগ
জিতলো চোখের পানি,
জিতে গেলো ব্যর্থ হওয়া
তামিমের ক্যাচ খানি।

মাহমুদুল্লাহ মাহমুদুল্লাহ
সেঞ্চুরিয়ান তুমি,
লিখালে নাম ইতিহাসে
ধন্য বাংলার ভূমি।

জিতে গেছে মাশরাফি ভাই
ত্যাগী ক্রিকেট নেতা,
ধন্যবাদ দেই সবাইকে তাই
যাদের জন্য জেতা।

বাংলার বাঘ হালুম করে
ঘেউ ঘেউ করেনা,
বিশ্ব মাঝে উঁচু মাথা
কাউকে ছাড়ে না।


একুশ নয়তো আট
ওয়াহিদ জামান


ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ
ইংরেজি এক নাম,
জীবন দিলো বাংলার তরে
এই কী তাহার দাম?

ফাল্গুন মাসের আট তারিখে
সব বাঁধন ছিড়ে,
রক্ত দিলো দেশ জনতা
রাজপথের ভিড়ে।

ফাগুন এলে আগুন জ্বলে
মায়ের ভাষা কই?
বিদ্যালয়ে নেইতো এখন
বাংলা ভাষার বই।

উর্দু ছেড়ে হিন্দি ধরে
মডার্ণ শিশুর দল,
টিভি দেখে শিখছে তারা
দাদা বাবুর ছল।

পরের ভাষায় বিচার চলে
আদালত পাড়ায়,
ব্যঙ্গ বাংলা দেখছি কেন
কবিতা ছড়ায়।

রেডিওতে আজব বাংলা
শুনছি আমরা সব,
এফএম জুড়ে জকিদের ঐ
নষ্ট কলোরব।

ফেব্রুয়ারি বাতিল করে
বলো সব ফাগুন,
একুশ নয়তো আট তারিখে
উৎসবে জাগুন।
ভাষা সৈনিক
ওয়াহিদ জামান


ভাষা সৈনিক
ঋণী দৈনিক
দিয়ে গেলে রাষ্ট্রভাষা,

ভাষার বড়াই
করে লড়াই
পেলাম শেষে মাতৃভাষা।

রক্ত ঝিলে
জীবন দিলে
উঁচু রাখলে বাংলা ভাষা,

সালাম-শফিক
বরকত-রফিক
তোমরাই মুক্তির আলো আশা।

যাদের জন্য
বাংলা ধন্য
তাদের তরে ভালোবাসা,

বই পড়াতে
সই করাতে
সবখানে চাই মায়ের ভাষা।
মায়ের ভাষা
ওয়াহিদ জামান


মায়ের ভাষা
ভালোবাসা
এই ভাষাতেই কান্না হাসা।


আমার ভাষা
বলছে চাষা
বাংলা আমার সবচে খাসা।


মনের আশা
স্বপ্ন ঠাসা
লিখতে পড়তে বাংলা ভাষা।


পরের ভাষা
সর্বনাশা
বাংলাকে চাই রাষ্ট্রভাষা।
প্রেমের জগৎ
ওয়াহিদ জামান


ভালোবাসা এক জটিল রোগ
প্রেমিক যুগল রোগী,
টিন এজের পোলাপানেরা
ইহার ভুক্তভোগী।


ভার্সিটিতে ছড়ায় এ রোগ
কলেজ থেকেই শুরু,
কেউবা রোগী স্কুল থেকেই
যারা প্রেমের গুরু।


মডার্ণ যুগে ছড়ায় আবার
ফেসবুক-টুইটার থেকে,
মোবাইল আরো সহজ তাই
গেছে তারা পেঁকে।


পার্কে পার্কে ঘুরে তারা
ডেটিং করার জন্য,
সিনেমা দেখতে হলে যায়
কিস করে হয় ধন্য।


চৌদ্দই ফেব্রুয়ারি তাদের
জাতীয় দিবস হয়,
এদিন তারা মনের সুখে
সারাদিন বাইরে রয়।


নিয়ত যদি শুদ্ধ থাকে
বিবাহ হয় শেষে,
নইলে তারা ঘুরে বেড়ায়
পাগলা দেবদাস বেশে।


এইতো হলো প্রেমের জগৎ
সবাই এর বাসিন্দা,
কেউ জড়িত সরাসরি
কারো শুধুই ধান্দা।
ফাগুন
ওয়াহিদ জামান


আসছে ধরায় ফাগুন
জীর্ণতা সব ভাগুন
জ্বলবে রঙের আগুন
পুড়বে নষ্ট বাগুন
যতই আপনি রাগুন
তাই বলি সব জাগুন
উঠে পড়ে লাগুন
আসছে ফুলের ফাগুন।
প্রেমিক বচন
ওয়াহিদ জামান 


স্বৈরাচারী পিতা মাতার
নাইতো অধিকার,
যখন তখন নষ্ট করবে
প্রেমের স্বাধিকার।


প্রেম কে তোমরা ভাবছো বুঝি
নতুন আবিস্কার,
প্রেমতো ছিল আগে থেকেই
বিষয় পরিস্কার। 


প্রেমের পথে আসবে বাধা
আসতে পারে ঝড়,
সহজ নয় উড়িয়ে দেয়া
নয়তো এটা খড়। 


হৃদয় বন্ধন মজবুত থাকলে
নাইকো তাদের ভয়,
যুদ্ধ শেষে নিশ্চয় একদিন
হবে প্রেমের জয়।


এসব হলো প্রেমিক বচন
আসল কথা নয়,
প্রেমের সংসার সুখি হয়না
বিজ্ঞ জনে কয়।

হলুদ খামে
ওয়াহিদ জামান


হলুদ একটা খামে
চন্দ্র তারার দামে
ভালোবাসা পাঠাতে চাই জান পরাণের নামে।

সহজ একটা কামে
ভিজলো শরীর ঘামে
ভালোবাসি লিখতে গিয়েই কলম কেন থামে?

সুপার একটা গামে
জুড়বে ডানে-বামে
সেই আশা কি পূর্ণ হবে এইনা ধরাধামে?

জীবনের সব দামে
ভালোবাসার নামে
অবশেষে পাঠিয়ে দিলাম হলুদ সেই খামে।
ভালোবাসা
ওয়াহিদ জামান


চোখ দুটি ছলছল
জল দেখি টলমল
এই বুঝি নামবে ঝর্ণাধারা,

দৃষ্টিতে ভালো লাগা
ভেবে ভেবে রাত জাগা
স্বপ্নালু মন তাই পাগলপারা।

কি খাওয়া কিযে নাওয়া
আনমনে গান গাওয়া
উস্কো খুস্কো আগোছালো সব,

সারাদিন শুয়ে শুয়ে
ছড়া কাটি কার হয়ে
ভালো লাগে বৃষ্টির ঝুমঝুম রব।

পাখিদের কিচির মিচির
ঘাসের ডগার ঐ শিশির
আরো চাই চাঁদনী রাতের আলো

এই আমার ভালোবাসা
প্রেম দিবো ঠাসা ঠাসা
দেখতে চাই তুমি- কতই ভালো।

ভালোবাসার কে মালিক
ময়না, টিয়া না শালিক?
জান-প্রাণ-পাখি বলে অনেকজন,

সৃষ্টিতে যিনি আমার
রূপ গড়লেন তিনি তোমার
তাই দিলাম তাকেই আমার এই মন।



সংকল্প
ওয়াহিদ জামান


আল্লার হুকুম মানবো সবাই
থাকবো ভালো কাজে,
মন্দ থেকে আসবো ফিরে
জীবনের সব সাজে।

নামাজ কায়েম করবো মোরা
রোযা করবো আদায়,
যাকাত দিবো গরীব-দুখির
মহৎ হবে হৃদয়।

ভালো কাজের দিবো আদেশ
নিষেধ খারাপ কাজের,
সম্পদ থাকলে মক্কায় গিয়ে
বলবো আমি হাজের।

আখিরাতে পাই যেন ভাই
জান্নাতের মহা সুখ,
দেখতে যেন না হয় মোদের
জাহান্নামের ঐ দুখ।
বই পড়
ওয়াহিদ জামান


হতে চাও বড়
বই তবে পড়
দেশের কল্যাণে নিজেকেই গড়ো।

নতুন নতুন বই
তোমরা গেলে কই
জ্ঞানের আলোয় সব আলোকিত হই।

কবিতা ছড়া
পড়া আর গড়া
ভাবনার সাগরে জ্ঞান ভেলায় চড়া।

উপন্যাস গল্প
প্রবন্ধ স্বল্প
ফিচার কলামে সাজাও রূপকল্প।
পপুলেশন সায়েন্স
ওয়াহিদ জামান


জনসংখ্যা বা জনগণ
ইংরেজিতে পপুলেশন
সরকার করে গণন,

সায়েন্স বলতে বিজ্ঞান বুঝায়
তত্ত্ব তার ব্যাবহারিক চায়
গড়তে জাতির মনন।

এণ্ড ব্যবহার যুক্ত করতে
এবং অর্থে পড়তে লিখতে
যুক্ত আমরা সবাই,

হিউম্যান বলতে বুঝবে মানুষ
থাকবে তাদের মান এবং হুশ
কোন ভেদাভেদ নাই।

সম্পদ অর্থে রিসোর্স আসে
থাকে সেটা মানব পাশে
মানুষ প্রধান সম্পদ,

ডেভেলপমেন্টের একটাই পণ
মানব সম্পদের উন্নয়ন
সমৃদ্ধ জনপদ।


ফেলানী
ওয়াহিদ জামান


ফেলানীরে ফেলানী
আমরা তোমায় ভুলিনি
বিচার একদিন হবে,

কাঁটাতারে ঝুলছে দেশ
নির্যাতনের নাইকো শেষ
তিমির কাটবে কবে?

সীমান্তের বাড়াবাড়ি
জল নিয়ে কাড়াকাড়ি
আর কতো ছলনা,

মাদকের ছড়াছড়ি
মরনাস্ত্রের নাই জুড়ি
বন্ধ কি হবে না?

ছিটমহল বিনিময়ে
পাশের মানচিত্র জয়ে
পটু অনেক দাদা,

পাবে না ক্ষমা তুমি
মুক্ত হবেই এই ভূমি
মরবি হারামজাদা।

সূচিপত্র

ফেসবুকে অগ্নিগিরি

সংবাদপত্র

পত্রিকার কলামসমূহ

বাংলা সাময়িকী

রবীন্দ্র রচনাবলী

নজরুল রচনাবলী

টেলিভিশন

জনপ্রিয় ওয়েবসাইট সমূহ

অনলাইন রেডিও